নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রথম বাংলা
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদ্য সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়াকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার চরম অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মিয়া ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট সিআইডি প্রধান হন। ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে সম্প্রতি তাকে ওই পদ থেকে সরানো হয়। এবার তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো।
১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর পুলিশে যোগ দেওয়া মোহাম্মদ আলী মিয়া গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা। সিআইডি প্রধান হওয়ার আগে তিনি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, মানিকগঞ্জ ও হবিগঞ্জের জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন।
এসব পদে থাকাকালীন মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগও কম ছিল না। তবে তৎকালীন সরকারের ‘ঘনিষ্ঠ’ কর্মকর্তা হিসেবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর সিআইডি প্রধান হিসেবে বসার পর ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করেন পুলিশের সাবেক এ কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে, সিআইডি প্রধান থাকার সময় দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতায় নিজেকে অপ্রতিরোধ্য করেছিলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া। বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তার সৌজন্যমূলক আচরণে বিভিন্ন সময় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করত অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে।
একটি সূত্র মতে, মোহাম্মদ আলী মিয়া সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে নিজের ক্ষমতা বলয় সবসময় টিকিয়ে রাখতেন। প্রভাব খাটিয়ে সিআইডিতে তৈরি করেছিলেন নিজস্ব সিন্ডিকেট।
অভিযোগ রয়েছে, নিজের সেই সিন্ডিকেটে কতিপয় অধস্তন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যুক্ত করেন। কয়েকশ ভুয়া অভিযোগ এনে তদন্ত করার নামে সিআইডির এই সাবেক প্রধান অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাধারণ পুলিশ সদস্যদের হেনস্থার বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরে জানালেও মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কেবল দুর্নীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে থাকেননি মোহাম্মদ আলী মিয়া। তার বিরুদ্ধে নারী পুলিশ সদস্যদের যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।সুযোগ পেলেই নারী কর্মকর্তাদের অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন তিনি। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বলয়ের কর্মকর্তা হওয়ায় মোহাম্মদ আলী মিয়া ও তার সিন্ডিকেটের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না।