বিশেষ প্রতিবেদক, প্রথম বাংলা
দুর্নীতি সিদ্ধহস্ত গণপূর্ত’র প্রধান বৃক্ষপালনবিদ শেখ মো. কুদরত ই খুদা তুষার। গণপূর্ত অধিদপ্তরের মালি ও ঝাড়ুদারের নির্ধারিত পোশাকের টাকা আত্মসাতের থেকে শুরু করে এমন কোন অভিযোগ নেই যা তার বিরুদ্ধে নেই।
এর পরও এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় বিভাগটির প্রধান বৃক্ষপালনবিদ হিসেবে পদটি দখল করে বসে আছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের সকল অপকর্ম। সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা কুদরত ই-খুদা তুষার। এক লাফে দুই টেবিল প্রমোশন বাগিয়ে গেড়ে বসে আছেন এই পদে। যা সরাসরি শৃঙ্খলার লঙ্ঘন।
জানাগেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের মালি ও ঝাড়ুদারের নির্ধারিত পোশাকের টাকা আত্মসাতের পর তার বিরুদ্ধে পোশাক আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলেও এ প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। উল্টো যারা তদন্ত করেছেন তাদের ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্নভাবে হয়রানিও করা হয়েছে তাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মচারী বলেন,
মালিদের পোশাকের জন্য প্রতি বছর ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। বরাদ্দ থেকে কখনও মালিদের টাকা দেওয়া হয়, আবার কখনও পোশাক তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের পর থেকে ওই কর্মচারীদের কোনও পোশাক বা পোশাকের জন্য নির্ধারিত অর্থ পাচ্ছেন না তারা।
এদিকে গত ৯ বছর ধরে মালিদের জন্য বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। প্রথম অভিযোগ উঠে ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে। ভুয়া বিল তৈরি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায় প্রধান বৃক্ষপালনবিদ কুদরত-ই-খুদার বিরুদ্ধে। পরে তার নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়।
এছাড়া, তার বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপনে অনিয়ম, ফুলগাছ লাগানোর নামে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি ফুলের বাগানে ছাগলের খামার স্থাপন, রাতের আঁধারে গোপনে গাছ বিক্রি, গাড়ি বিক্রিসহ নানা অনিয়ম ও অসদাচারনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার।
এসকল কিছুরই ছোট প্রমাণ মিলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এপিপি ও পত্রিকার বিজ্ঞাপন তালিকা দেখে।
তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ও দূর্নীতির বিষয়ে জানতে তার অফিসে স্বশরীরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
এরপর তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোন ধরনের বক্তব্য না দিতে ফোন রিসিভ করেন না।
তবে এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জন্য সংবাদকর্মীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তখন তিনি তাদেরকে বলেন, আপনাদের এত মাথাব্যাথা কেন! যার বিয়া তার খবর নাই। মধ্যখান দিয়ে পাড়াপড়শি’র ঘুম নাই। ফোন রাখেন।