নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রথম বাংলা
রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া ও শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলায় বেআইনিভাবে অনেক কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন বৈষম্যের শিকার এবং বে-আইনীভাবে চাকুরীচ্যুত শ্রমিক ও কর্মচারীরা। একই সঙ্গে চাকরিচ্যুতদের পুনরায় চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বেলা রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলের দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ জানান ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের ক্যাটারিং সেলস এক্সিকিউটিভ ও শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান।
নুরুজ্জামান বলেন, এই হোটেলকে কোনো অপশক্তি যেন দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে না পারে, অপশাসন, অব্যবস্থাপনা না থাকে এবং হোটেলকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে কিছু শ্রমিক-কর্মচারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাদের রোষানলে পড়ে। যার ফলশ্রুতিতে উক্ত শ্রমিক কর্মচারীদের ঐ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা বিআইসিসি প্যাড ইস্যু করে চাকুরিচ্যুত করে। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এমডি, জিএম, এইচ আর ডিরেক্টর সহ আরও কর্মকর্তার দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারীতার বিস্তর প্রমাণ আছে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক-কর্মচারীরা এই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ কে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে।
তিনি বলেন, যে ফ্যাসিবাদের কারণে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে ঠিক একই ফ্যাসিবাদ এই পাঁচ তারকা হোটেলে বিদ্যমান, কারণ বেশির ভাগ কর্মকর্তা ফ্যাসিবাদের দোসর। আমাকে গত ২৮ আগস্ট ভোর ৪টায় ডিবি তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং রমনা থানার ওসি আমাকে চাপ দিতে থাকে এই আন্দোলন থেকে যেন আমি সরে যাই। যা আগের ফ্যাসিবাদি পুলিশ করত কিন্তু স্বৈরাচার পতনের পরও এই ফ্যাসিবাদ পুলিশ সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়া আমাকে উঠিয়ে নিয়ে গুম করে রাখে এবং পরিবারকে কোনো তথ্য দেয় না। পরবর্তীতে সকাল ৮টা হতে ছাত্র সমাজ এবং সহকর্মীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, তাকে ডিবি উঠিয়ে নিয়ে যায়। যা অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে। শুধু তাই নয় রমনা থানার ওসি ছাত্র-সমাজ ও সহকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার, ঔধ্যত্যপূর্ণ আচরণ এবং অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এমনকি আমার স্ত্রীর সাথেও অশালীন-অসদচারণ করেন এবং মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়া নিতে বলে যেন আমি আর কোনো আন্দোলন না করেন। যা সেই পুরানো ফ্যাসিবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতা ও সহকর্মীদের ন্যায়সঙ্গত চাপ প্রয়োগে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এখন প্রশ্ন জাগে এটা কোন দেশ? যে দেশ আমরা স্বৈরাচার মুক্ত করেছি? কি ব্যবহার পাচ্ছি সরকারি অফিস থেকে?
তিনি আরও বলেন, হোটেলের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের অপসারণে কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত কর্মচারীদের অতিসত্ত্বর চাকুরিতে পুনর্বহাল করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিগত ১৪ বছর চাকরি করার পর আমি সহ ৩৬ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং দুর্নীতিগ্রস্থদের বিচার চাই। আমরা ম্যানেজমেন্টকে অনুরোধ করি আমাদের শ্রমিকদের অধিকার যেন প্রতিষ্ঠা করা হয়। আমরা এর আগেই আমাদের দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করি। আমরা চাই আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক।