মঙ্গলবার , ১৮ মার্চ ২০২৫ | [bangla_date]
  1. অর্থনীতি
  2. আইটি বিশ্ব
  3. আজকের পত্রিকা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ও জীবন
  6. একদিন প্রতিদিন
  7. কোভিড-১৯
  8. খেলা
  9. চাকরি
  10. চিত্র বিচিত্র
  11. জনপ্রিয় সংবাদ
  12. জাতীয়
  13. ডাক্তার আছেন
  14. দরকারি
  15. দৃষ্টিপাত

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভিতরে আরেক মন্ত্রণালয়

প্রতিবেদক
Prothom Bangla
মার্চ ১৮, ২০২৫ ২:১৬ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রথম বাংলা

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ, যুগ্মসচিব শামীমা ফেরদৌস ও উপসচিব মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানান অভিযোগ উঠেছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সাবেক সচিব মো. খায়রুল আলম সেখকে ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) করা হলেও তিনি এখনো মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন। তার এই কাজে সহায়তা করছেন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট-এর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (যুগ্মসচিব) শামীমা ফেরদৌস এবং ট্রাস্টের পরিচালক (উপসচিব) ও ফেনীর সাবেক বিতর্কিত জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার।

সূত্রমতে, খায়রুল আলম সেখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকাকালীন শামীমা ফেরদৌসের সাথে যোগসাজশে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর তিনি শামীমা ফেরদৌসকে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেন। এরপর থেকেই মন্ত্রণালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বাড়তে থাকে।

খায়রুল আলম সেখের নেতৃত্বে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, পদোন্নতি বাণিজ্য এবং বদলি বাণিজ্যের মতো অনিয়মের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এই কাজে সহযোগিতা করছেন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তা।

ওএসডি হওয়ার পরও খায়রুল আলম সেখ নিয়মিত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করছেন। বিশেষ করে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে তার সক্রিয়তা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, একজন ওএসডি কর্মকর্তার প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ চক্রের সহায়তায় তিনি কার্যত নিজের প্রভাব বজায় রেখেছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট ও বহিরাগতদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ের বাহিরে নিয়মিত বৈঠক করেন বলেও অভিযোগ আছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান  সচিব ড. মো. মহিউদ্দিনের চোখ এড়িয়ে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জরুরি হলেও, খায়রুল আলম, শামীমা ফেরদৌস ও শাহীনা আক্তারের মতো কর্মকর্তারা বর্তমান  অন্তবর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কাজে লিপ্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, ফেনীর সাবেক জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার মহিপালে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার প্রধান সহযোগী, ২৪ এর বন্যার নীরব দর্শক ও দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে বিশেষ পরিচিত। ফেনীর জনগণ তাকে ‘গণহত্যার সহযোগী’ আখ্যা দিয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের ’রাতের ভোট’ নির্বাচনের সময় রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে, শামীমা ফেরদৌস ও তার স্বামী সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন দু’জনই আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

মো. খায়রুল আলম সেখ ১৩ ব্যাচের অতিরিক্ত সচিব থেকে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন। অথচ তার নিয়ন্ত্রিত কিংবা অধীনস্ত সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ১১ ব্যাচের কর্মকর্তা। শেখ রেহেনাকে মোটা অংকের টাকা দেওয়ার বিনিময়ে তিনি সচিব হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠরা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উৎসাহী হয়ে উঠেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। খায়রুল আলম, শামীমা ফেরদৌস ও শাহীনা আক্তারের মতো কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড সরকারকে যে কোনো সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চলমান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

সর্বশেষ - রাজনীতি